পরিবেশ চৈতন্য

চেতনা নয় চৈতন্য।বিশ্ব জুড়ে যে সংকট আমাদের সামনে উপস্থিত তার মোকাবিলায় দরকার পরিবেশচৈতন্য।
               চৈতন্য হল আত্মচেতনা।বহির্জগতের বিষয়ে সম্যক জ্ঞান ও অন্তরের চেতনা লাভের মধ্য দিয়ে আত্মার চৈতন্য জেগে ওঠে। 
             
                 সকল জীবের মত পরিবেশের আর সব উপাদানের মধ্যেই মানুষের সৃষ্টি,বিবর্তন ও অধিবাস। কিন্তু স্বার্থ ও বিলাসের মোহে আচ্ছন্ন মানুষ যখন পরিবেশের প্রতি বিমুখ হয়ে ওঠে এবং আত্মমগ্নতা ও অজ্ঞতার কারণে পরিবেশের ক্ষতি করে তখনই প্রাসঙ্গিক হয় পরিবেশচৈতন্য
         
               পরিবেশ  চৈতন্য আর কিছুই নয় প্রকৃতিপরমাত্মার সাথে জীবাত্মার এক হয়ে যাওয়া।
সম্প্রতিকালে বিশ্বউষ্ণায়ন,বনধ্বংস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের পিছনে মানুষের মুর্খামি কতটা দায়ী তা আমরা জানি।সমস্যাটা সেখানেই।আমরা প্রত্যেকে পরিবেশ দূষণ,গ্রিনহাউস প্রভাব বিষয়ে জানি।অথচ আমাদের যেসব আচরণ এই বিপদের কারণ তাদের বদলাতে আমরা নারাজ।
আমরা নিজেদের মধ্যে  ছোটো ছোটো পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে পরিবেশচৈতন্য আনতে পারি।
                পরিবেশচৈতন্য এমন এক মানসিক সত্ত্বা যেখানে আমরা সহজাত প্রবৃত্তির মতি পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রক্ষা করে চলব - যেই চলা অন্য সকল প্রাণী চলে।আমরা অবচেতনেও এমন কাজ করব না যাতে পরিবেশের ক্ষতি হয়।
                 এবার প্রশ্ন করাই যায় - মানবসভ্যতার উন্নয়নের ধারা বজায় রেখেও পরিবেশকে অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব কি?
               সম্পূর্ণ সম্ভব নয় ঠিকই তবে উন্নয়ন এমন হতে পারে যাতে তার ফলে পরিবেশের যতটুকু ক্ষতি হয় তা হোমিওস্ট্যাটিক প্রক্রিয়ায় পূরণ হয়ে যায়।এর থেকে এসেছে  SUSTAINABLE DEVELOPMENT এর ধারণা।
                  কিন্তু পরিবেস্পচৈতন্য আসবে কিভাবে ? ওই যে বললাম নিজেদের মধ্যে  ছোটো ছোটো পরিবর্তনের মাধ্যমে ঃ পরিবর্তন চিন্তাচেতনার।দৈনিক প্রতিটি কাজের সময় ভাবতে হবে - এই কাজটা কি পরিবেশের ক্ষতি করছে?ক্ষতিটা কি পূরণযোগ্য?এর কি কোনো বিকল্প আছে?
                                           চিন্তার পরিবর্তন হলেই কর্মের পরিবর্তন হবে।
       বড় বড় কর্মসূচি যেমন বনমহোৎসব বা ওরিয়েন্টেশন ক্যাম্প ইত্যাদি হচ্ছে ও হবে।প্রশাসনিক উদ্যগেরও প্রয়োজন আছে। কলকারখানা,নগরায়ণ নিয়ন্ত্রন ইত্যাদি অনেক উঁচু স্তরের বিষয়।আমি বলছি  ব্যক্তিগত ভাবে এককস্তরে আমি ও তুমি কি করতে পারি।তুমি,তোমার থেকে তোমার পরিবার,তার থেকে তোমার গ্রাম,শহর, সমাজ ও সর্বোপরি জাতির পরিবর্তনের আসবে।
               তুমি যদি ভাবো "আমার একার পরিবর্তনে কী হবে?"আমি বলব যা ৮০ বছর আগে গান্ধিজী বলেছিলেন,"যেই পরিবর্তন জগতে তুমি দেখতে চাও সেই পরিবর্তন আগে নিজে হয়ে দেখাও।"
 অবশেষে একটা গানের পংক্তি বলে শেষ করবো ঃ 

                                           You may say I am a dreamer,
                                              But I'm not the only one.
                                                And I hope one day
                                                  You will join us.

Comments

Popular posts from this blog

নিরীশ্বরবাদীর দ্বন্দ্ব